সেরা প্রেমের গল্প – Romantic Love Story Bangla

সেরা প্রেমের গল্প – Romantic Love Story Bangla “যে শহরে ১০০টাকায় নারীদেহ পাওয়া যায় সেই শহরে নারীর জন্য কান্না করতে যাবো কেন?” ছেলেটার কথা শুনে একটু অবাক হলাম। ল্যাম্পপোস্টের হলুদ সোডিয়ামের আলোতে খেয়াল করলাম ছেলেটা চোখের জল আটকানোর বারবার বৃথা চেষ্টা করছে।

অর্ধখাওয়া সিগারেটটা ছেলেটার দিকে এগিয়ে দিয়ে বললাম, – টানার অভ্যাস আছে? ছেলেটা আমার হাত থেকে সিগারেটটা নিয়ে নিকোটিনের ধোঁয়া আকাশে ছাড়তে ছাড়তে বললো, – “মালিহার সাথে আমার ৩ বছরের প্রেম। অথচ ১৫ দিনের পরিচয়ে সে অন্য একটা ছেলের সাথে রাত কাটালো।

আচ্ছা সে যখন অন্য একটা ছেলের সামনে নগ্ন হচ্ছিলো তখন কি একবারও আমার কথা মনে হয় নি? মনে হয় নি সেই সব দিনের কথা? যাকে এক পলক দেখার জন্য সারাদিন ওর বাসার সামনের কদম গাছে বানরের মতো ঝুলে থাকতাম। এলাকার মানুষজন তো আমার নামও দিয়েছিলো “কদম গাছের বান্দর”।

ছেলেটা যখন ওর উন্মুক্ত বুকে নাক ঘষছিলো তখন তার একবারও মনে হয় নি আমার কথা? তার থেকে দূরে থাকতে হবে বলে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েও ভর্তি হই নি।

ছেলেটা যখন লালসার চিহ্ন ওর সারা গায়ে একে দিচ্ছিলো তখন কি তার একবারও মনে হয় নি আমার কথা? আমার চুম্বন তো শুধু ওর কপালেই আটকে ছিলো। কখনো তো কপাল থেকে ঠোঁট অব্দি পৌছায় নি। তাহলে কি এটাই আমার ভুল ছিলো?” ছেলেটার প্রশ্নের কোন উত্তর দিতে পারি নি।

সেরা প্রেমের গল্প

সেরা প্রেমের গল্প
Photo by Jasmine Carter on Pexels.com

শুধু যাওয়ার সময় সিগারেটের প্যাকেটটা ছেলেটার হাতে দিয়ে বললাম, -যদি পারো কষ্টগুলো নিকোটিনের ধোঁয়ার সাথে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করো। যদি কষ্ট উড়াতে পারো তাহলে হয়তো বেঁচে যেতে পারো… রাত কয়টা বাজে জানি না। বাসা থেকে বের হবার সময় ঘড়ি, ফোন কোনটাই সাথে আনি নি।

দিন হলে হয়তো সূর্য দেখে বলে দেওয়া যেতো কয়টা বাজতে পারে । চাঁদ দেখে বলা সম্ভব না। পিছনে যে ছেলেটাকে ফেলে এসেছি সে হয়তো আজ সারারাত সিগারেটের সাথে নিজেও পুড়বে।

বারবার চোখের জল মুছবে আর নিজেই নিজেকে বুঝাবে, “যে শহরে ১০০টাকা দিয়ে নারীদেহ পাওয়া যায় সেই শহরে নারীর জন্য কাদবো কেন?” একসময় হয়তো নিজের কাছে নিজেই হেরে যাবে… অনেকক্ষণ ধরে খেয়াল করছি একটা কুকুর আমার পিছন পিছন হাটছে।

আমি কুকুরটাকে জিজ্ঞেস করলাম, – কিরে, তুই কি কোন কুত্তীর মায়ায় আটকেছিলি? কুকুরটা আমার দিকে তাকিয়ে কয়েকবার ঘেউঘেউ করলো।

আর অর্থ হলো, “ কারো মায়াতে আটকানোর সময় নাই। ভাদ্র মাসে সবাই সমান” কুকুরটা ঠিকিই বলেছে। এই শহরে এখন ভাদ্রমাস চলছে। কেউ বা ৩ বছরের প্রেম ভুলে অন্যের সামনে কাপড় খুলছে আর কেউ বা—— ঘেউ ঘেউ ( যার অর্থ, তুই কি কারো মায়াতে আটকেছিস?”) এই প্রশ্নের কোন উত্তর দেই নি।

হাঁটতে হাঁটতে ব্রীজের উপর এসে যখন দাঁড়ালাম তখন খেয়াল করি এক তরুণী ব্রীজের রেলিংয়ের উপর দাঁড়িয়ে আছে। আমি পিছন থেকে মেয়েটাকে বললাম, -ঝাঁপ দিয়ে লাভ নেই।

মরবেন না। নদীতে এখন হাটু পানি। উল্টো কাঁদায় মাখামাখি হবেন মেয়েটা আমার দিকে তাকিয়ে মনমরা ভাবে হেসে বললো, – “ যার সর্বাঙ্গে কাঁদা লেগে আছে তার শরীরে নতুন করে আর কি কাঁদা লাগবে?” আমি বললাম, -যেহেতু সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মরে যাবেন সেহেতু একটু সময় নিয়ে মরুন। দেখা গেলো মরার জন্য ঝাঁপ দিলেন অথচ মরলেন না। উল্টো নদীর দূষিত পানি খেয়ে পেট খারাপ হয়ে গেলো।

মেয়েটা কিছুক্ষণ চুপ থেকে মাথা নিচু করে বললো, – “এই সময়টা যে আমার হাতে নেই। ভালোবাসা টিকিয়ে রাখতে নিজের শরীরটা বিলিয়ে দিলাম।

Romantic Love Story Bangla

সেরা প্রেমের গল্প
Photo by Luke Miller on Pexels.com

যখন বুঝতে পারলাম আমার শরীরের মাঝে অন্য একটা শরীরের অস্তিত্ব প্রকাশ পাচ্ছে তখন ভালোবাসার মানুষের হাতে পায়ে ধরে বললাম, চলো বিয়েটা করে ফেলি।

সে বিয়ে করে নি নিজের ক্যারিয়ারের জন্য। বরং আমাকে বাধ্য করেছে এমন একজনকে খুন করতে যার এখনো জন্মই হয় নি। ভালোবাসা টিকিয়ে রাখতে এটাও করলাম।

কিন্তু যার জন্য এতো পাপ করলাম তাকে পেলাম না। সরকারী বড় পোস্টে জব পেয়ে যাবার পর মানুষটা আমায় বলে দিলো তার সাথে নাকি আমাকে মানায় না। আজ অন্য একটা মানুষকে বিয়ে করে নিলো।

অন্য একটা নারীর চোখের দিকে যখন সে তাকাবে তখন কি আমার কথা ওর একবারও মনে পড়বে না? ও কি ভুলে যাবে ওর যখন শূন্য পকেট ছিলো তখন আমি কোনদিন ৩ বেলা খাবার খাই নি।

একবেলা খেয়ে বাকি দুইবেলার খাবারের টাকা ওর হাতে তুলে দিয়েছি। ঐ নারীর হাতটা যখন স্পর্শ করবে তখন কি ওর একবারও মনে পড়বে না আমার কথা? যে আমি ২০ টাকা বাস ভাড়া বাচানোর জন্য রোদে পুড়ে পায়ে হেঁটে চলাচল করেছি।

অন্য মেয়ের শাড়ির আঁচলটা যখন ও সরাবে তখন ও কি ভুলে যাবে আমি রঙ জ্বলে যাওয়া সালোয়ার কামিজ পড়তাম শুধু ওর পরিহিত জামাটা যেন চকচক করে?” আমি মেয়েটার প্রশ্নের কোন উত্তর দিতে পারি নি। শুধু যাবার আগে এটাই বললাম, – সাঁতার না জানলে হাটু পানিতেও মৃত্যু হতে পারে।

যদি সাঁতার জানেন তাহলে বেঁচে যেতে পারেন… কুকুরটা এখনো আমার পিছন পিছন হাটছে। আমি কুকুরটা বললাম, -তুই জানিস ছেলেটা সিগারেটের প্যাকেটটা শেষ করে নিজের দেহ থেকে নিজেকে বিসর্জন দিবে? কুকুরটা ঘেউ ঘেউ করলো যার অর্থ হলো ( চলে যাওয়ার জন্যই আমরা জন্মেছি।

আমাদের চলে যেতেই হবে) – তুই এটা জানিস, মেয়েটা সাঁতার জানার পরেও মেয়েটা মারা যাবে? কুকুরটা আবারও ঘেউঘেউ করলো, যার অর্থ হলো ( বেঁচে থাকার ইচ্ছে শক্তি ফুরিয়ে গেছে বলেই মেয়েটার মৃত্যু হবে) -তুই এটা জানিস, কিছুক্ষণ পর চলন্ত একটা গাড়ি আমার এই দেহটাকে থেতলে দিয়ে চলে যাবে? কুকুরটা এইবার নিশ্চুপ হয়ে আমার চোখের দিকে তাকিয়ে রইলো।

রোমান্টিক লাভ স্টোরি গল্প
সেরা প্রেমের গল্প
Photo by Mateus Souza on Pexels.com

এইবার মনে হলো কুকুরটা সত্যি সত্যি আমায় কিছু বলতে চাইছে কিন্তু কথা বলার ক্ষমতা নাই দেখে সে বলতে পারছে না। যদি তার কথা বলার ক্ষমতা থাকতো তাহলে সে বলতো, “কেন নিজেকে নিজে শেষ করে দিতে চাইছিস।” আমার উত্তর হতো তখন, – এক জোড়া সোনার বালার কাছে ১ ডজন কাঁচের চুড়ির মূল্য নিতান্তই কম।

আচ্ছা আমার স্ত্রী যখন অন্য একটা পর পুরুষের খোলা পিঠে নখের আঁচড় কাটছিলো তখন কি তার একবারও আমার কথা মনে হয় নি? সে কি ভুলে গিয়েছিলো সেইসব দিনের কথা? প্রতিদিন বাসায় ফেরার সময় তার জন্য বুক পকেটে করে বেলীফুলের মালা আনা।

শাড়ির কুচি গুলো ঠিক করে তার বাঁকা টিপটা সোজা করে দেওয়ার কথা কিংবা মাঝরাতে দুইজনের ঝুম বৃষ্টিতে ভিজা? আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। ঝপসা চোখে তাকিয়ে দেখি র*ক্তে ভিজে আছে কাচের চুড়ি গুলো।

কুকুরটা সমানে ঘেউঘেউ করছে। হয়তো সে বলতে চেষ্টা করছে, “ কেন এমনটা করলি? মানুষতো এর চেয়েও বেশি কষ্ট নিয়ে বাঁচে।” আমার নিথর দেহটা রাস্তায় পড়ে রইলো।

কুকুরটা আমার পাশে বসে ঘেউ ঘেউ করতে লাগলো যার অর্থ হলো, ( আমি অভিশাপ দিলাম এই শহরের সেই সব প্রেমিক-প্রেমিকার মৃত্যু হোক, যারা শুধু একজনকেই নিঃস্বার্থভাবে ভালোবেসে ঠকেছিলো)। হেরে যাওয়া মানুষ 💔💔💔

Leave a Comment